Header Ads Widget

Responsive Advertisement

শরীয়াহ আমাদের জীবন ব্যবস্থায় কি ভূমিকা রাখে?

ইসলামী জীবন ব্যবস্থায় একমাত্র আল্লাহর বাণী ও রাসুলের (সাঃ) সুন্নাহ আইন-এর মৌলিক উৎস।
কুরআন ও সুন্নাহর নির্দেশনায় যে জীবন ব্যবস্থা ইসলাম-এর অনুসারীদের প্রদান করা হয়েছে তাই “শরীয়াহ”
আক্ষরিক অর্থে এই আরবি শব্দটির (শরীয়াহ) অর্থ দাঁড়ায়, জীবনের উৎস-পথ।
পারিভাষিক অর্থে, এটা এমন এক আইন-পদ্ধতি যা কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে কোন ব্যবহারবিধিকে বোঝায়।
সৎ বিশ্বাসে কোন মুসলিম নিজের ব্যবহারবিধিকে কোনভাবেই ধর্মীয় ও ধর্মনিরপেক্ষ আবর্তে আবদ্ধ করে রাখতে পারেন না,
কারণ একজন মুসলিমের সমগ্র জীবনটাই শাসিত হবে শরীয়ার মাধ্যমে।

ব্যষ্টিক ও সামষ্টিক জীবন নিয়ন্ত্রণের দিক-নির্দেশনা দেয়াই শরীয়ার কাজ।
ভাল, খারাপ, পাপ-পুণ্য নির্ণয় করার পদ্ধতি, শরীয়াহ জানিয়ে দেয়।
শরীয়াহ একটি পরিপূর্ণ জীবন-ব্যবস্থা ও সর্ব-পরিব্যাপ্ত সামাজিক শৃঙ্খলার নাম।
অংশবিশেষ বা আংশিক জীবনের চেয়ে জীবনের সামগ্রিকতার তাৎপর্য ইসলামে অত্যন্ত গুরুত্ববহ।
সুতরাং শরীয়াহ কার্যক্রম যথাযথভাবে পরিচালিত করার জন্য সামগ্রিক জীবন পদ্ধতিকে এর আওতায় আনতে হবে,
অন্যথায় এর কার্যকারিতা দৃশ্যমান হবে না।
শরীয়াহ সম্পর্কে একটি প্রণিধানযোগ্য দিক হলো এই যে, মানব জীবনের
সব দিক প্রত্যক্ষ ও সুনির্দিষ্টভাবে এর আওতায় আসে না।
আওতাভুক্ত বিষয়গুলোর মধ্যে কিছু রয়েছে পরিপূর্ণ নিয়ন্ত্রিত,
আর কিছু রয়েছে কতিপয় দিক-নির্দেশক নীতিমালার আওতায় স্বল্পমাত্রায় নিয়ন্ত্রিত।
ব্যক্তিগত জীবনে শারীরিক ও মানসিক পবিত্রতা, প্রার্থনার মাধ্যমে
আল্লাহর স্মরণকে সদাজাগ্রত রাখা প্রভৃতি বিষয় অত্যন্ত বিস্তারিতভাবে শরীয়াহ্ আলোকপাত করেছে।
এরপর আসে পারিবারিক জীবন ও তদসম্পৰ্কীয় আর্থসামাজিক বিষয়াদি।
ব্যবসা, বাণিজ্য ও অর্থ সংক্রান্ত বিষয়গুলো প্রধানত সুনির্দিষ্ট কতিপয় সাধারণ শর্তাধীনে নিয়ন্ত্রিত হয়।

শারীয়াহ শাসিত সমগ্র জীবন-ব্যবস্থার অংশ বিশেষ হচ্ছে ইসলামী আইন।

এই সমগ্রতার বাইরে এর কোন স্বকীয় অবস্থান অস্তিত্বহীন।
তাই শরীয়াহ পদ্ধতি বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত।
কিছু এমন বিষয় রয়েছে যা প্রয়োগ করতে বাইরের কোন শক্তির দরকার পড়ে না।
এগুলো শুধু কোনো মুমিনের ঈমান দ্বারা প্রজ্জ্বলিত, সদা-জাগ্রত বিবেক দ্বারা শাসিত হতে পারে।
ইসলামী আইন-এর সুবিশাল পরিধি এমন রয়েছে
যার আনুপুঙ্খ প্রয়োগের জন্য সূক্ষাতিসূক্ষ্মভাবে শক্তির প্রয়োগ ও রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব অবশ্যম্ভাবী।
আধুনিক প্রেক্ষাপটে সরকার যেসব নির্দেশ ও নিয়ম-কানুন অনুমোদন করে থাকে,
সে সবকে আইন বলে মনে করা হয়।
সংশ্লিষ্ট ইসলামী ধারণা অনুযায়ী এই আইনের সমার্থক হিসেবে শরীয়াহকে দাঁড় করানো যায়।
কারণ, কুরআন সুন্নাহর ভিত্তিতে সমগ্র জীবন-ব্যবস্থা যিনি উপহার দিয়েছেন,
তিনি হচ্ছেন সর্ব ক্ষমতার উৎস ও বিশ্বে সার্বভৌমত্বের কর্তৃত্ব তারই।
অবশ্য এমন অনেক বিষয়ও শরীয়াহ্ এর অন্তর্ভুক্ত,
যা অন্য ক্ষেত্রে আইন হিসেবে বিবেচিত হয় না।

আরও পড়ুনঃ  ইসলামী জীবনবীমা কিভাবে শরীয়ায় অনুমােদিত?

ইসলামে ধর্ম ও আইন এমন ওতপ্রোতভাবে জড়িত যে, একটা হতে অন্যটা বিছিন্ন করা যায় না।
ধর্ম ও আইন দুটোই শরীয়াহর আওতাভুক্ত।
পরিবর্তনশীল সময়ের দাবি ইসলামী আইন-অবকাঠামোর ওপর সবসময় চাপ প্রয়োগ অব্যাহত রেখেছে।
তা সত্ত্বেও শরীয়াহ তার অন্তঃস্থিত সংশোধন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে
এর মৌলিক বৈশিষ্ট্য সার্থকভাবে সংরক্ষণ করার পাশাপাশি সামাজিক প্রয়োজনে
নতুন নতুন চিন্তা ও সমসাময়িক বিষয়ে স্পষ্ট সুরাহা দেখানো সম্ভব হয়েছে।
ইসলামী ব্যাংক ও বীমা ব্যবস্থার উদ্ভব
তথা ইসলামী অর্থনীতির ক্রমবিকাশ ও বিস্তার
মুসলিম বিশ্বে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে।
জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে শরীয়াহর প্রতিপালন এখন সময়ের দাবি
এবং ব্যাপক সাড়া জাগানো বিষয়ে পরিণত হয়েছে।

 

Source: ইসলামী জীবন বীমার জানা অজানা ।। কাজী মোঃ মোরতুজা আলী

Visit our company website: Prime Islami Life Insurance Limited

Post a Comment

0 Comments